
ইয়াছিন আরাফাত, স্টাফ রিপোর্টার
কুমিল্লার চান্দিনা পৌর ভবনের সংস্কার কাজে অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। পৌর ভবনের প্রধান ফটক ও সীমানা প্রাচীর উন্নয়ন কাজে এ অনিয়মের অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান দুলাল।
গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) তিনি চান্দিনা পৌর প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,পৌর ভবনের সংস্কারে বরাদ্দ ৪০ লাখ টাকার মধ্যে প্রায় ১৬ লাখ টাকার স্টেইনলেস স্টিল (এসএস) গেট ও গ্রিল নির্মাণে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে এবং কাজও সিডিউল অনুযায়ী সম্পন্ন হচ্ছে না।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ১.৫ মিমি পুরুত্বের পাইপ ব্যবহার করার কথা থাকলেও বাস্তবে অধিকাংশ স্থানে ১ মিমি পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে, ফলে ব্যয় প্রায় ৪০ শতাংশ কমানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা জেলার সাতটি পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইডিএফপিসি)-এর আওতায় চান্দিনা পৌর ভবনের উভয় পাশে সীমানা প্রাচীর, এসএস গ্রিল ও চারটি গেট নির্মাণের কাজের জন্য ২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৪০ লাখ টাকার এ কাজটি পায় মেসার্স নজরুল এন্টারপ্রাইজ।প্রকল্প অনুযায়ী ১.১ মিটার উচ্চতা ও ৭৪ মিটার দৈর্ঘ্যের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, গ্রিল ও চারটি গেটে ১.৫ মিমি পুরুত্বের পাইপ ব্যবহারের কথা ছিল। তবে স্থানীয়ভাবে দেখা যায়, গেটের ফ্রেমে ১.৫ মিমি পাইপ ব্যবহার হলেও অন্যান্য স্থানে পাতলা পাইপ ও নিম্নমানের ইট-কংক্রিট ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারী মো. আসাদুজ্জামান দুলাল বলেন,
পৌর ভবনের উন্নয়ন কাজে এমন অনিয়ম হলে ভবিষ্যতে বাকি কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রতিদিন প্রকৌশলীরা কাজ তদারকি করছেন, তবু এমন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এটি দুঃখজনক।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নজরুল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. নজরুল ইসলাম বলেন,আমি ওয়ার্কশপে ১.৫ মিমি পাইপের অর্ডার দিয়েছি। যদি ওয়ার্কশপে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, তা সংশোধন করে সিডিউল অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করবো।
চান্দিনা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাত হাসান জানান,সব কাজ একসঙ্গে তদারকি করা সম্ভব হয় না। তবে কাজ শেষ হওয়ার পর সিডিউল অনুযায়ী মান যাচাই করা হবে। কাজের মান খারাপ হলে ঠিকাদার পরিবর্তন করা হতে পারে।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আশরাফুল হক বলেন,এ পর্যন্ত ঠিকাদারকে মোট বিলের মাত্র ১৫ শতাংশ পরিশোধ করা হয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঠিকাদারকে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখানে অনিয়ম বা ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই।